অধ্যায় ১: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
প্রশ্ন নং—১:
জামান দক্ষিণ কোরিয়াতে ড্রাইভার হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী নিয়ে আসে। সেখানে সে প্রথম এক মাস একটি বিশেষ কৃত্রিম পরিবেশে গাড়ি চালনার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। এই পরিবেশই সে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে গাড়ি চালানোর নানা কে․শল রপ্ত করে। জামান তার কাজের পাশাপাশি আরও একটি প্রতিষ্ঠানেও ডেটা এন্ট্রির কাজ নেয়। তার পাঠানো অর্থেই গ্রামের বাড়িতে তার অর্ধপাকা ঘরটি আজ দোতলা দালানে পরিণত হয়। (ঢাকা বোর্ড—২০১৬)
ক. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী? ১
খ. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে জামানের প্রবাস জীবনে কোন প্রযুক্তিটির কথা বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা কর। ৩
ঘ. জামানের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা মূল্যায়ন কর। ৪
১ নম্বর প্রশ্নের (ক) এর উত্তর ১
— মানুষের চিন্তাভাবনাগুলোকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটার বা কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্রের মাধ্যমেরুপ দেওয়ার ব্যবস্থাকে Artificial Intelligence বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়।
১ নম্বর প্রশ্নের (খ) এর উত্তর ২
— সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে অনলাইনে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করার প্রক্রিয়াকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে দুর—দুরান্তে বসে বিভিন্ন সামাজিক সাইটে বন্ধু তৈরি করার পাশাপাশি ছবি ও ভিডিও শেয়ার করা যায়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে অবস্থানরত প্রিয়জন বা বন্ধু—বান্ধবের সাথে মুহুর্তের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করতে পারছে। এই সকল মাধ্যমগুলিতে মানুষ স্বাধীনভাবে মতামতও প্রকাশ করতে পারছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট যেমন— ফেসবুক, টুইটার, মাইস্পেস, ইউটিউব,অরকুট ইত্যাদি।
১ নম্বর প্রশ্নের (গ) এর উত্তর ৩
— উদ্দীপকে জামানের প্রবাস জীবনে যে প্রযুক্তিটির কথা বলা হয়েছে তা হচ্ছে ভাচুর্য়াল রিয়েলিটি। ভাচুর্য়াল রিয়েলিটি হলো সেই প্রযুক্তি যা ত্রিমাত্রিক বিশ্ব সৃষ্টি করে এবং যার দৃশ্যমানতা বাহক জীবন্ত। প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্যেগকারী যোগান নির্ভর কল্পনাকে ভাচুর্য়াল রিয়েলিটি বা অনুভবে বাস্তবতা বলে। উদ্দীপকে জামানের প্রবাস জীবনে কৃত্রিম পরিবেশে বিশেষ পোশাক পরিধান করে বাস্তবের ন্যায় ত্রিমাত্রিক গ্রাফিক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটারের পর্দায় গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। ফলে জামান কোন প্রকার শারীরিক ঝুঁকি বা বিপদ ছাড়াই রাস্তায় গাড়ি চালানোর বাস্তব
অভিজ্ঞতা পেয়েছে। ভাচুর্য়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে যোকোন দৃশ্য দেখা ও শ্রবণানুভূতি করা যায়। হাতের সাথে সংযুক্ত গ্লোভস দ্বারা প্রয়োজনীয় কোন কমান্ড বা নির্দেশ দেওয়া হয় এবং সঙ্গে প্রয়োজনীয় দৃশ্যের অবতারণা এবং কোন নির্দিষ্ট কাজের নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ব্যবহারকারীকে অনুভবের এক অন্য পৃথিবীতে নিয়ে যায়।
১ নম্বর প্রশ্নের (ঘ) এর উত্তর ৪
— উদ্দীপকে বর্ণিত জামানের ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে জামান বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ কোরিয়াতে যায় ড্রাইভার হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে। সম্পূর্ণ একটি নতুন দেশে গিয়ে নতুন পরিবেশে অভ্যস্ত হওয়া এবং সেই দেশের রাস্তাঘাট ও নিয়মকানুন এক মাসের মধ্যে আয়ত্ত করা ছিল জামানের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। কিন্তু জামান এই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছে ভাচুর্য়াল রিয়েলিটির প্রযুক্তির সাহায্যে। এর ফলে কৃত্রিমভাবে হুবহু বাস্তব পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নিরাপদে প্রাক ড্রাইভিংসহ আরও নানা বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণ যথাযথভাবে সম্পন্ন করা যায়।
অন্যদিকে জামান তার কাজের পাশাপাশি আরও একটি প্রতিষ্ঠানেও ডেটা এন্ট্রির কাজ করে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম হয়। আবার দেশ থেকে সদূর বিদেশে থেকেও জামান আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ইলেকট্রনিক মেইল সুবিধার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে তার নিজ বাড়িতে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারছে এবং ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার সুবিধার কারণে তার পরিবারকে নিয়মিত ও নিরাপদে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পাঠাতে পারছে। এর ফলশ্রম্নতিতেই জামানের বাবা মা আজ তাদের অর্ধপাকা ঘরটিকে পাকা দালানে রুপান্তরিত করতে পেরেছেন। সুতরাং, উপযুক্ত আলোচনায় বলা যায়- জামানের আজ যা কিছু অর্জন তা কেবল তথ্য প্রযুক্তির কারণেই সম্ভব হয়েছে।
